১৯ মাস ধরে রাশিয়ার হামলার মুখে পশ্চিমা বিশ্বের সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা পেয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। কিন্তু সম্প্রতি সেই লাগাতার সহায়তায় কিছু ফাটল দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধ সম্পর্কে কিছুটা ক্লান্তি ও রুশ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যথেষ্ট সাফল্যের অভাব এর অন্যতম কারণ। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর করে যতটা সম্ভব সহায়তার প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফর উপলক্ষে মার্কিন প্রশাসন প্রায় ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার অঙ্কের নতুন সামরিক সহায়তার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বিশেষ করে আরো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেতে চলেছে ইউক্রেন। তবে সে দেশ এটিওসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র চাইলেও ওয়াশিংটন আপাতত সেই অনুরোধ মানতে নারাজ। মোটকথা রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহে আপত্তি না থাকলেও রাশিয়ার ওপর সক্রিয় হামলার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্রের প্রশ্নে আরো সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব।
তাই প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম এটিওসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রের প্রশ্নে ওয়াশিংটনের সংশয় এখনো কাটছে না। তা সত্ত্বেও প্রায় ৫৭৫ দিনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত মোট চার হাজার ৩৯০ কোটি ডলার অঙ্কের সামরিক সহায়তা দিয়ে এসেছে, যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
রাশিয়ার হামলার মুখে একটানা সহায়তার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে আলোচনার পর জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সামরিক প্যাকেজে ঠিক সেই সব অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম থাকছে, যা ইউক্রেনের সেনাদের এই মুহূর্তে প্রয়োজন।
বাইডেন জানান, আগামী সপ্তাহেই ইউক্রেন আব্রামস ব্যাটেল ট্যাংক হাতে পাবে। গত জানুয়ারি মাসে সেই সিদ্ধান্তের পর অবশেষে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়েছে।
বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ও সহায়তা চালিয়ে গেলেও মার্কিন রাজনৈতিক মহলে সার্বিক সহানুভূতি ও সামরিক সাহায্যের প্রশ্নে ঐকমত্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বিরোধী রিপাব্লিকান দলের একাংশ এমনকি খোলাখুলি এমন সহায়তার বিরোধিতা শুরু করেছে।