দ্য সোসাইটি অব এক্সপার্টস অন এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট-এর (সীড) আয়োজনে কপ-২৭ সম্মেলন ২০২২ উপলক্ষ্যে এক বিশেষ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সম্মেলন থেকে কী প্রত্যাশা করা যেতে পারে এবং বিশ্বব্যাপি তার গুরুত্ব তুলে ধরতে এই ওয়েবিনারটি আয়োজন করা হয়।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সীড-এর মূখ্য উপদেষ্টা ও পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান। ওয়েবিনারে কি-নোট উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়াউল হক।
সভাপতিত্ব করেন সীড-এর সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রেসিডেন্সি’র সিভিএফ’র বিশেষ দূত এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রাক্তন মুখ্য সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো: আবুল কালাম আজাদ। উপস্থাপনা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর ড. মো নাজমুস সাদাত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সীড-এর সাধারণ সম্পদক এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুল কাদির।
আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়-এর প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত; ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর (আইসিসিসিএডি) পরিচালক ড. সেলিমুল হক; বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার-এর (বিডিআরসি) গবেষণা পরিচালক ড. এম. আসাদুজ্জামান; এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর ক্লাইমেট ফাইন্যান্স এক্সপার্ট ড. মালিহা মুজাম্মিল।
প্রধান অতিথি সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি বলেন, এই সম্মেলনে দুই ধরণের দল উপস্থিত থাকে; প্রথম, যেসব দেশ পরিবেশের ক্ষতির জন্য দায়ী থাকে এবং দ্বিতীয়, বাংলাদেশের মতো যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দুই পক্ষ পারস্পরিক কল্যাণে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তবে বিগত সম্মেলনগুলোয় যেসব প্রতিশ্রুতি আমরা পেয়েছি তার যথাযথ বাস্তবায়ন হয়নি এবং এবছরও আমাদের দাবিগুলো কতটা বাস্তাবায়িত হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরবো, কিন্তু সেখান থেকে সাহায্য আসবে এই আশায় উন্নয়ন থামিয়ে রাখলে চলবে না।
বিশেষ অতিথি ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা’র প্রতিশ্রুতি থাকলেও বিভিন্ন কারণে আমরা তাদের থেকে আশানুরূপ সহায়তা পাইনি। অ্যাডাপশনের জন্যও আমাদের আশানুরূপ সাহায্য না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা বৈদেশিক সাহায্য আশা করলেও নিজস্ব অর্থেই বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে। সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, যা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। যারা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি ও সমাজ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে ও জোরালোভাবে সেখানে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এই ওয়েবিনারে সকলেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন, যা কপ-২৭ সম্মেলনে আমাদের প্রতিনিধি দলকে শক্ত বক্তব্য উপস্থাপনে সাহায্য করবে। আগামী ১০, ১৫ এবং ২০ নভেম্বরে ওয়েবিনার হবে, যেখানে সম্মেলনের যাবতীয় তথ্যাদি নিয়ে আলোকপাত হবে যাতে করে সকলে এসব বিষয়ে অবগত থাকতে পারেন।”
উল্লেক্ষ্য, ১৯৯২ সালে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন গ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বনেতারা শীর্ষ কিছু লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করতে প্রতিবছর বিশেষ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী ০৬ থেকে ১৮ নভেম্বর মিশরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কনফারেন্স অব পার্টিস ‘কপ-২৭ সম্মেলন’, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ও গুরুত্ববহ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।