টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরে অবস্থিত কুমুদিনী হাসপাতালে একটি প্রেসার সুইং অ্যাডস্পর্শন (পিএসএ) মেডিকেল অক্সিজেন জেনারেশন প্ল্যান্ট স্থাপনে অর্থায়ন করছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। এর ফলে রোগীদের জন্য নির্ভরযোগ্য ও স্বয়ংসম্পূর্ণ অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতে হাসপাতালের সক্ষমতা ও কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি হবে। চাহিদাকালীন অথবা জরুরি অবস্থাতেও এই পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট ১৫০ জন রোগীকে প্রতি মিনিটে ৬০০ লিটার নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করবে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বিনিয়োগ কুমুদিনী হাসপাতালের রোগীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
মেডিকেল অক্সিজেনের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা যেকোন কমিউনিটি হাসপাতালের জন্য গেম-চেঞ্জার হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতি বছর কুমুদিনী হাসপাতাল আনুমানিক ৩,৫০,০০০ রোগীকে আউট-পেশেন্ট পরিষেবা এবং ৪৮,০০০ রোগীকে ইন-পেশেন্ট পরিষেবা প্রদান করে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের অর্থায়নের মাধ্যমে হাসপাতাল এখন রিস্পেটরি সাপোর্ট প্রদানে গুরুতর রোগীদের প্রয়োজনীয় মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহে সক্ষম হবে।
২০২২ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড দেশব্যাপি তিনটি হাসপাতালে পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট সরবরাহ করেছে; চট্টগ্রাম মা-ও-শিশু হাসপাতাল, টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রাফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল, এবং ইউনাইটেড ট্রাস্ট এম এ রশিদ হাসপাতাল। পূর্বে স্থাপিত তিনটি প্ল্যান্টের মোট ধারণক্ষমতা প্রতি মিনিটে ১,৩০০ লিটার ছাড়িয়ে গেছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি স্বাস্থ্যকর জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা সম্ভব বলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বিশ্বাস। এরই ফলপ্রসূ, দেশের অন্যতম দাতব্য সংস্থা কুমুদিনী হাসপাতালে অক্সিজেনের স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেরে আমরা গর্বিত। পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্টের মাধ্যমে সাশ্রয়ীভাবে হাসপাতাল দরিদ্র্ রোগীদের বিনামূল্যে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ নিশ্চিত করতে করবে। অন-সাইট মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্ট ব্যবহার করে যেকোন গুরুতর ও জরুরি পরিস্থিতিতেও কুমুদিনী হাসপাতাল আত্মবিশ্বাসের সাথে সকল জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে ও সহায়তা প্রদানে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস।”
কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজীব প্রসাদ সাহা বলেন, “আমাদের জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি এবং তাদের সেবা প্রদানের জন্য কুমুদিনী অংশীদারিত্বে বিশ্বাস করে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃক এই সহায়তা আমাদের কাজকে আরও সহজ করে তুলবে এবং রোগীদের জন্যও ভীষণ কল্যাণজনক হবে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নত করতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সাথে এই অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে আমরা আশাবাদী।”
দেশের দীর্ঘমেয়াদী অংশীদার হিসাবে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিস্থাপকতার অনুপ্রেরণামূলক গল্পের সাথে যুক্ত হয়েছে। ১১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে, ব্যাংক এই দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য, বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তি প্রচারের জন্য পরিষেবা প্রসারিত করা এবং স্টেকহোল্ডারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করার জন্য নিবেদিত রয়েছে। বিগত বছরগুলোয় সামাজিক কল্যাণে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সম্পৃক্ততা ও টেকসই উদ্যোগগুলো অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের দিকে ফোকাস করেছে, বিশেষ করে; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিক শিক্ষা, কৃষি উদ্ভাবনে সমর্থন, খেলাধুলা, শিল্পকলা, সাংস্কৃতিক প্রচার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই ইত্যাদি।
১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অফ বেঙ্গল (বিডি) লিমিটেড বাংলাদেশের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম দাতব্য সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম। এই সংস্থার অধীনে কুমুদিনী নার্সিং স্কুল অ্যান্ড কলেজ নার্সদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য নিবেদিত৷ এছাড়াও, কুমুদিনী হাসপাতাল টাঙ্গাইলে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতাল যা কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ট্রাস্টের অর্থায়নে পরিচালিত হাসপাতালটি বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।