ভারতে রাহুল গান্ধীকে সাজা দেওয়া গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের ‘বেআইনি পদোন্নতি’র ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার রাহুলের সাজা বজায় রাখা গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতিকে বদলি করলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম ব্যবস্থা গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছককে পাটনা হাইকোর্টে বদলি করেছেন।
গত ৩ আগস্ট প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের বৈঠকে ওই বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিচারপতি প্রচ্ছক ছাড়াও বদলি করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টের আরো আট বিচারপতিকে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট ‘অপরাধমূলক অবমাননা’ মামলায় অভিযুক্ত রাহুলের সাজার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন দেশটির শীর্ষ আদালত। এরপর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তাকে খারিজ হওয়া সংসদ সদস্য পদ ফিরিয়ে দেন।
বিচারপতি প্রচ্ছক গত ৭ জুলাই নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে রাহুলের আবেদন খারিজ করেছিলেন।
এসংক্রান্ত আরো খবর :
রাহুল গান্ধীর ‘মুক্তিতে’ মমতার খুশির টুইট!
রাহুল গান্ধীকে সাজা দেওয়া বিচারকসহ ৬৮ জনের পদোন্নতি স্থগিত
গুজরাট হাইকোর্টে আরজি খারিজ, ধাক্কা খেলেন রাহুল গান্ধী
গুজরাট হাইকোর্টে ছাড় পেলেন না রাহুল গান্ধী, জুনে চূড়ান্ত রায়
জেলের সাজা স্থগিত, এবার কি সংসদ সদস্য পদ ফেরত পাবেন রাহুল?
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্ণাটকের কোলারে ‘মোদি’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হরিশ হাসমুখভাই বর্মা দুই বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। এর পরই নিয়ম ভেঙে তার পদোন্নতি হয়েছিল বলে অভিযোগ। গত ১২ মে বিচারপতি এম আর শাহ ও সি টি রবিকুমারকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ সেই পদোন্নতিতে স্থগিতাদেশ দেন।
বিচারক বর্মার পাশাপাশি, আরো ৬৭ জন বিচারককে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্যের বিজেপি সরকার ২০০৫ সালের ‘গুজরাট স্টেট জুডিশিয়াল সার্ভিস রুল’ ভেঙে পদোন্নতি দিয়েছে বলেও সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন। সবগুলো বদলির ওপরেই জারি হয় স্থগিতাদেশ। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবশ্যই অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার মাপকাঠির বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।’
রাহুলের বিরুদ্ধে গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদির দায়ের করা ওই ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় বিচারক বর্মার দেওয়া সাজা গত ৩ এপ্রিল বহাল রেখেছিলেন সুরাট জেলা দায়রা আদালতের বিচারক রবিন পল মোগেরা।
তিনি ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধমূলক মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা অমিত শাহের (বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) আইনজীবী ছিলেন। ওই মামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল, সাজানো পুলিশি সংঘর্ষে তুলসিরাম প্রজাপতি হত্যা মামলা। অমিত শাহ গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ওই সাজানো সংঘর্ষে খুনের ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ।
সূত্র: কালের কণ্ঠ