শিরোনাম

সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। স্বাধীনতা লাভের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩ বছর ৭ মাস ৫ দিন সময় পেলেও বিমান বহরে যুক্ত করেন সর্বমোট ১২টি উড়োজাহাজ। ১২টি উড়োজাহাজের মাধ্যমে তিনি ৫টি অভ্যন্তরীণ, ৪টি আঞ্চলিক ও একটি দূরবর্তীসহ মোট ১০টি গন্তব্যে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর নির্দেশনায় ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে প্রথম অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশে বিমান পরিবহনের শুভ সূচনা হয়। এরপর বিমান ডানা সম্প্রসারিত করে ঢাকা-যশোর, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ঈশ্বরদী এবং ঢাকা-কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ গন্তব্যস্থলে। ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টায় প্রথমে লন্ডন ও পরে কলকাতা রুটে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ১৯৭৩ সালে ঢাকা-বাহরাইন-লন্ডন ও ঢাকা-ব্যাংকক ফ্লাইট চালু হয়। ১৯৭৪ সালে দুবাই ও কাঠমান্ডুতে ডানা মেলে বিমান।

বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতায় নতুন প্রজন্মের ১৮টি উড়োজাহাজসহ ২১টি উড়োজাহাজ বিমান বহরে যুক্ত হয়। ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে রয়েছে ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, ৬টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এবং ৫টি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম তারুণ্যদীপ্ত এবং আধুনিক বহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

২০২৩ সালের শুরুতে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিষেবা আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে নতুন মোবাইল অ্যাপস এবং লয়্যালটি প্রোগ্রাম চালু করে। সম্মানিত যাত্রীগণ এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে টিকিট ক্রয় ও পছন্দসই আসন নিজেরাই নির্বাচন করতে পারেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ওয়েব টিকিটিং, ওয়েব চেক-ইন, ওয়েব ভিত্তিক রিফান্ড সিস্টেম এবং লয়্যালটি প্রোগ্রামের মতো অনলাইন ভিত্তিক পরিষেবা চালু করে একটি স্মার্ট এয়ারলাইন হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিমান IATA এর সাথে একটি ডাইরেক্ট ডাটা সলিউশন (ডিডিএস) চুক্তি করেছে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিমান কল সেন্টার আপগ্রেড করছে। সম্প্রতি একটি স্বনামধন্য ফ্লাইট ডিসপ্যাচ সলিউশন ‘লিডো ফ্লাইট ফোর ডি’ চালু করা হয়েছে।

বিগত ২০২৩ সালে বিমান ঢাকা-নারিতা-ঢাকা এবং ঢাকা-চেন্নাই-ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করার পাশাপাশি ঢাকা-গুয়াংজু-ঢাকা রুট পুনরায় চালু করেছে। বর্তমানে সকল অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের পাশাপাশি ২২টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। বিগত বছরে দেশের সবচেয়ে বড় হজ কার্যক্রম পরিচালনা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দক্ষ প্রশিক্ষক পাইলটরা মঙ্গোলিয়ান এয়ারলাইন্সের পাইলটদের বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার পরিচালনার প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে।

বাংলাদেশের একমাত্র গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কোম্পানি হিসেবে ২০২৩ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অসামান্য গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ইন্টারন্যাশনার এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সেফটি অডিট ফর গ্রাউন্ড অপারেশন্স (ISAGO) সনদ অর্জন করেছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিষেবার অধিকতর উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট ক্রয় করা হয়েছে এবং নতুন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও অতিরিক্ত সচিব জনাব শফিউল আজিম এর গতিশীল নেতৃত্বে একটি সেবামুখী কর্পোরেট সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি কার্যক্রম যেমন: ইনফ্লাইট সার্ভিসের জন্য ‘মুক্তা’ পানি ব্যবহার, প্রত্যাবাসন ও জরুরি সেবামূলক ফ্লাইট পরিচালনা, খেলাধুলার পৃষ্ঠপোষকতা ইত্যাদি কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বিমান রেকর্ড সংখ্যক (৩১ লক্ষ) যাত্রী পরিবহন করেছে যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ছিল ২২ লক্ষ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশে বিমানের আন্তর্জাতিক মার্কেট শেয়ার ২২% এ পৌঁছেছে। করোনা মহামারী ও পরবর্তীতে ডলারের উচ্চমূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও টানা তৃতীয় বারের মত লাভের ধারা অব্যাহত রেখে সরকারের লাভজনক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম অবস্থানে রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

আরও দেখুন

১৫তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ২০২৪-এ অংশ নিচ্ছে সাইনেস্ট

১৫তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ২০২৪ এক্সপো-তে মেডিকেল টেকনোলজি সল্যুশনস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সাইনেস্ট-এর অত্যাধুনিক মেডিকেল গ্রেড মনিটর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *