নিরাপদ ইফতার নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) উদ্যোগে রমাজন মাসে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক উদ্ধুদ্ধকরণ কার্যক্রম ও অভিযান সকল বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইত্যাদি জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এই কর্মসূচি চলছে। রাজধানীর চকবাজার, বেলি রোড, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর ও আগারগাঁও ৫টি এলাকায় মনিটরিং বুথ স্থাপন করা হয়েছে। বিএফএসএ-এর সদস্য (খাদ্য শিল্প ও উৎপাদন) প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল আলীম-এর নেতৃত্বে কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং পরিচালক ডাঃ এজাজুল ইসলাম। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, ঢাকার পান্থপথ এলাকায় ইফতার প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতাদের মাঝে হাইজিন পণ্য, লিফলেট, ক্যাপ পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়। একইসাথে ভোক্তাদের নিরাপদ ইতফার ক্রয়ের সময় সতর্ক ও সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ডা. এজাজুল ইসলাম বলেন, ইফতার সামগ্রী বিক্রির যে চিত্র কয়েক বছর আগেও ছিল এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এটি ইতিবাচক ও প্রশংসনীয়। দোকানদাররা সবকিছুই ঢেকে রাখছেন, হাইজিন মানার চেষ্টা করছেন। দৃশ্যমান বিষয়গুলো দেখে ক্রেতা সাধারণ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করছেন। তিনি সকলের প্রতি আমার আহ্বান, পরিবারের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য যাচাই-বাছাই করে পণ্য ক্রয় করবেন। ব্যক্তি সচেতন হলে ব্যবসায়ীরা বাধ্য হবে নিরাপদ খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ ও বিক্রি করতে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত “নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক নির্দেশিকা” বই পড়বেন। মোবাইল অ্যাপ “খাদ্য কথন” থেকেও খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।
প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল আলীম বলেন, খাদ্য পণ্য উৎপাদক, সরবরাহকারী, বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের প্রশিক্ষিত ও সচেতন করতে বিএফএসএ বছর ব্যাপী নানান কাজ করছে। ক্ষতিকর পোড়া ভোজ্য তেলের বিকল্প ব্যবহার শুরু হয়েছে। পোড়া তেল থেকে এখন বায়োডিজেলে রূপান্তর করা হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সফলতা অর্জন সহজ হবে।
জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম টিমে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএফএসএ-এর অতিরিক্ত পরিচালক অমিতাভ মন্ডল, জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল হাসনাত, সহকারী পরিচালক দিপু পোদ্দার, গবেষণা কর্মকর্তা এস. এম. শিপন, মনিটরিং অফিসার মোহাম্মদ ইমরান হোসেন মোল্লা, পিআর এজেন্সি কনসিটো-এর ম্যানেজার কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স এন্ড সিএসআর মোঃ আওলাদ হোসেন প্রমূখ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ‘নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’র উপর ভিত্তি করে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারী খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তাঁরা ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো; মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মনিটরিং, টক শো, গোল টেবিল বৈঠক, রোড শো, ল্যাব-ক্যারাভান রোড শো, গ্রেডিং প্রদান, সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান, সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার অংশগ্রহণে সেমিনার ও ওয়ার্কশপ, গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিয়, হাত ধোয়া কর্মসূচি, বস্তিবাসীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ ইত্যাদি। এছাড়াও, বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির যথাযথ অনুশীলনের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে খাদ্য উৎপাদন, আমদানী, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ, বিপণন, বিক্রয় প্রক্রিয়া ইত্যাদি নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে সমন্বয় সাধন করছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।