দামে ইতিহাস গড়ল ‘সস্তা মাংস’ বলে পরিচিত ব্রয়লার মুরগি। রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজারে এই মুরগি ২১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মাত্র তিন সপ্তাহেই কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
প্রায় একই হারে বাড়ছে সোনালি মুরগির দামও। গতকাল প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ৩০০-৩১০ টাকায়। বেড়েছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। কিন্তু হালি কিনলে দাম নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এর আগে কখনো ২০০ টাকার বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে হয়নি। মূলত বাজারে মুরগির সরবরাহ কমার কারণেই দাম বাড়ছে। ভোক্তারা বলছেন, দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আসন্ন রমজানে গিয়ে আরো দাম বাড়বে, তাঁদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে ব্রয়লার মুরগিও।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষি মার্কেট, কারওয়ান বাজার ও জোয়ারসাহারা বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব মুরগির দাম বৃদ্ধির বিষয়টি জানা যায়।
বাজারে অন্যান্য মাংসের তুলনায় অনেকটা কম দামেই পাওয়া যায় ব্রয়লার মুরগি। এ জন্য স্বল্প আয়ের মানুষের মাংসের চাহিদা মেটানোর প্রধান ভরসা ‘সস্তা মাংস’ ব্রয়লার মুরগি। গত মাসের মাঝামাঝি থেকেই বাড়তে শুরু করে এই মুরগির দাম।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গতকাল ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১৯০-২০০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা। আর দেশি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা দরে।
মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন দাম বাড়তি দিয়েও চাহিদা অনুযায়ী খামারিদের কাছ থেকে মুরগি পাচ্ছি না। শীতকালে মুরগির রোগবালাই বেশি হয় বলে মুরগি পালন করেন না অনেক খামারি। এর ফলে এখন বাজারে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। তাই বাড়ছে দামও।’
রাজধানীর কয়েকজন মুরগি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পোলট্রি খাদ্য, বাচ্চা, ওষুধসহ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে।
রাজধানীর কৃষি মার্কেটে বাজার করতে গিয়ে মাহবুবুল আলম সোহাগ বলেন, ‘আজ (গতকাল) ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ টাকা। মুরগি খাওয়ার দিন শেষ। গিলা-কলিজা খাওয়ার দিন শুরু করতে হবে।’
ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জোয়ারসাহারা বাজারের এক ব্যবসায়ী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাইকারি ব্যবসায়ীরা শীতে ফার্মের ডিমের সরবরাহ কমার অজুহাত দিয়ে প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়াচ্ছেন। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করছি। এখন খুচরায় প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর প্রতি হালি বিক্রি করছি ৫০ টাকায়।
সূত্র:কালের কণ্ঠ