খাদ্যব্যবস্থা ও পুষ্টির উন্নয়নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে, মাল্টি-স্টেকহোল্ডার অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম সাউথ এশিয়ান পলিসি লিডারশিপ ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন অ্যান্ড গ্রোথ-এর (স্যাপলিং) আঞ্চলিক অধিবেশনের প্রথম পর্ব ঢাকার প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁয় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্র্যাক-এর আয়োজনে ও ভারতীয় উন্নয়ন সংস্থা আইপিই গ্লোবাল লিমিটেড-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন খাতের নেতৃবৃন্দ প্যানেলিস্ট হিসেবে একত্রিত হন। অধিবেশনে সরকারি প্রতিনিধিবৃন্দ, বহুপাক্ষিক সংস্থা, গবেষণা সংস্থাসহ ৫ দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতি ছিলেন। অধিবেশনে ৩টি ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়; ক্লাইমেট-স্মার্ট ফুড সিস্টেম, ফসল-পরবর্তী ক্ষতি এবং নিরাপদ খাদ্যের মানদন্ড।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, “দেশের জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার যথেষ্ট অগ্রগতি সাধন করেছে। ঘন-ঘন জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশের খাদ্যব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা খাদ্য নিয়ে বৈষম্য সৃষ্টিসহ খাদ্যের সহজলভ্যতা সংকটের মুখে ফেলতে পারে। সেটি বিবেচনায় স্যাপলিং-এর এই আয়োজন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আমি মনে করি ক্রস-লার্নিং, জ্ঞান বিনিময়, খাদ্যের মানোন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় উৎপাদনশীল ভবিষ্যত নিশ্চিতে এই প্ল্যাটফর্মটি সদস্য দেশগুলোকে বিরাট সুযোগ প্রদান করবে। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে টেকসই খাদ্যব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আঞ্চলিক সহযোগিতা গঠনে স্যাপলিং অনন্য ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশাবাদী।”
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের সহজলভ্যতা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিতে বহু-ক্ষেত্র এবং বহু-দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা প্রয়োজন।” তিনি এই রিজনের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্য সংক্রান্ত আঞ্চলিক বাণিজ্য জোরদারের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার সিদ্ধার্থ চতুর্বেদী স্যাপলিং-এর দেশগুলোয় কার্যকর সমাধান প্রতিষ্ঠায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং দেশ পর্যায়ের সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বিশ্বব্যাংক ঢাকার সিনিয়র কৃষি অর্থনীতিবিদ আমাদো বা তার বক্তব্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং জাতিসংঘের খাদ্যব্যবস্থা সামিটের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
আলোচনায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং স্থানান্তর, জ্ঞান প্রচার ও বিনিময় শক্তিশালীকরণ, সক্ষমতা তৈরি, সমাধান প্রদর্শন, অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টিসহ দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্যব্যবস্থা উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। অধিবেশনে সদস্য দেশসমূহের প্রধান খাতগুলোয় যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা ও সমর্থন করতে একটি আঞ্চলিকপ্ল্যাটফর্ম হিসাবে স্যাপলিং প্রশংসিত হয়।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত স্যাপলিং-এর লক্ষ্য হলো প্রমাণ-নির্ভর নীতিমালা, কর্ম-পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচ দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা) মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা।